স্বদেশ ডেস্ক: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (ইউএসটিসি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মাসুদ মাহমুদকে তার কক্ষ থেকে টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় নামিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়েছে একদল শিক্ষার্থী। ড. মাসুদের বিরুদ্ধে শ্রেণিকক্ষে যৌনতাবিষয়ক আপত্তির কথাবার্তার অভিযোগ করেছে তারা।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে খুলশী এলাকায় ইউএসটিসি ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মাহমুদুল হাসান নামে এক ছাত্রকে আটক করেছে। ঘটনার পর ড. মাসুদের অপসারণ দাবিতে ক্যাম্পাসের সামনে জাকির হোসেন রোড একঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভও করেছেন শিক্ষার্থীরা।
পরে পুলিশ এলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। ড. মাসুদ এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে কর্মরত ছিলেন। অবসর গ্রহণের পর তিনি ইউএসটিসির ইংরেজি বিভাগের উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত আছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ বিভাগে এখনো একজন ভালো শিক্ষক হিসেবে ড. মাসুদের পরিচিতি আছে।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি পাঠ্যসূচির অংশ হিসেবে ড. মাসুদ ইউএসটিসির ইংরেজি বিভাগে ক্লাসে বেশ কয়েকটি কবিতা পড়াতে গিয়ে যৌনতা বিষয়ে আলোচনা করেন। যা শিক্ষার্থীরা মেনে নিতে পারেননি। তারা কয়েকদিন আগে থেকেই ড. মাসুদকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। এরই অংশ হিসেবে গতকাল দুপুরে কয়েকজন শিক্ষার্থী ড. মাসুদকে তার কক্ষ থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে আনে। এর পর তারা ওই শিক্ষকের গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেয়। তবে আগুন দেওয়ার আগেই অন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এসে ড. মাসুদকে উদ্ধার করেন।
ড. মাসুদ দাবি করেন, শ্রেণিকক্ষে তিনি যা বলেছেন তা ছিল ইংরেজি সাহিত্যের ঢঙেই। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালেও তার বিরুদ্ধে কখনো কেউ এমন অভিযোগ আনতে পারেনি। ইউএসটিসির ইংরেজি বিভাগের দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি কয়েকজন অদক্ষ শিক্ষককে সরিয়ে দিয়েছেন। ওই শিক্ষকদের ইন্ধনেই শিক্ষার্থীদের একাংশ তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে আন্দোলন করছে।
ইউএসটিসির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার দিলীপ কুমার বড়ুয়া বলেন, একজন প্রবীণ শিক্ষককে এভাবে অফিস থেকে টেনে বের করে গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে অপমান করা হয়েছে। এ অপমান সব শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও। যারা শিক্ষকের গায়ে কেরোসিন দিয়েছে তাদের বিষয়ে পুলিশকে তথ্য দেওয়া হয়েছে। তারা তদন্ত করে দেখছে।
খুলশী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, ইউএসটিসির মাস্টার্সের ছাত্র মাহমুদুল হাসান স্বীকার করেছেন, তিনি ড. মাসুদের গায়ে কেরোসিন ঢেলেছেন। উপাচার্যকে অবহিত করে আমরা তাকে আটক করেছি।