স্বদেশ ডেস্ক:
ধর্ষকের ক্রসফায়ারে কিংবা বন্দুকযুদ্ধে দেয়ার পক্ষে মত দিয়ে সংসদে বক্তব্য রেখেছেন সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যরা। তারা ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধানেরও দাবি করেন।
গতকাল সন্ধ্যায় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সদস্যরা ধর্ষণ এবং ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন ভঙ্গ করা প্রসঙ্গে কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ সময় বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
ধর্ষকের ক্রসফায়ারের প্রসঙ্গটির অবতারণা করেন জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্ন। পরে জাতীয় পাটির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ একই দাবি করেন। পরে তাদের সাথে একমত পোষণ করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, মাদকের ব্যাপারে যদি সাথে সাথে শেষ করে দেয়া যায় ধর্ষণে কেন যাবে না। ভারতে একবার বাসে এক নারীকে ধর্ষণ করা হয়। পরে সেখানে ওই পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর ক্রসফায়ারে মেরে ফেলা হয়। তারপর ভারতে ধর্ষণের ঘটনা কমে যায়। কাজেই আমি অন্য দুই সদস্যের সাথে একমত। আমি যদি চিনি যে ওনি ধর্ষক, সেই এ কাজ করেছে তার আর এই পৃথিবীতে থাকার অধিকার নেই।
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, টাঙ্গাইলে বাসে ধর্ষণের পর পর পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতার করল। সেদিন যদি পুলিশ পাঁচজনকে মধুপুরে নিয়ে গুলি করে মারত, তাহলে কিন্তু আবার ধর্ষণ হতো না।
তিনি বলেন, একটার পর একটা ধর্ষণ হচ্ছে। মেয়েরা বাসে ওঠে ওই বাসে আগে থেকেই ৪-৫ জন থাকে। নারীরা ওঠার পর দেখা যায় যাত্রী না ওরা ধর্ষক। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের পর একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হোক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য, সেখানে গুলি করে মারা হোক।
তিনি বলেন, ধর্ষকদের একমাত্র শাস্তি এনকাউন্টারে দিয়ে মেরে ফেলা। যাতে আর কোনো ধর্ষক সাহস না পায়। ধর্ষক গ্রেফতার হওয়ার সাথে সাথে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী নিয়ে ওইখানে গুলি করে মেরে ফেলা হোক।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ঢাবির ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হলো। ধর্ষণের পর যদিও সরকারের পক্ষ থেকে জরুরিভাবে সেই ধর্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও গ্রেফতার করার পরও জনমনে অনেক প্রশ্ন এটার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের পর পরই সাভারে একটি ধর্ষণ করা হয়, সেখানে মেয়েটিকে হত্যা করা হয়। এরপর ধামরাইতে একই ঘটনা ঘটে। ২০১৯ সাল ধর্ষণের মহাৎসব। এটা সঠিক। এ জন্য তিনি স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, কেন ধর্ষণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কী? এ জন্য সংসদে দুই ঘণ্টার আলোচনার দাবি করছি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রেসিডেন্ট এরশাদ যখন ক্ষমতায় ছিলেন, ওই সময় এসিড হত্যাকাণ্ড বেড়ে যায়, তখন ওটাকে প্রতিরোধ করার জন্য এসিড মারার জন্য প্রমাণিত হলে অপরাধীকে থমৃত্যুদণ্ডের বিধান করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে ধর্ষণ কন্ট্রোল হচ্ছে না। তাই সময় এসেছে, চিন্তা করার ধর্ষণের দায়ে যদি প্রমাণ হয় তার সাজা যাজ্জীবন না দিয়ে মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা করা হোক। এত ঘটনা ঘটছে, মাদকের জন্য এত ক্রস ফায়ার হচ্ছে, সমানে বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়, এই ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ, জঘন্য ঘটনার জন্য কেন আজ পর্যন্ত একটা বন্দুকযুদ্ধে মারা যায় না? বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে যদি ব্যবস্থা না নেয়া যায় কোনোক্রমেই কন্ট্রোল হবে না।
তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বলেন, টুপি দাড়ি মাথায় নিয়ে আল্লাহকে হাজির নাজির করে বলছি এদের ক্রসফায়ার করলে বেহেশতে যাওয়া যাবে। কোনো অসুবিধা নেই। অবশ্য স্পিকার এ ব্যাপারে কোনো রুলিং না দিয়েই অন্য কর্মসূচিতে চলে যান।