স্বদেশ ডেস্ক: শেষ বার তাঁকে আর্জেন্টিনা জার্সিতে দেখা গিয়েছিল ব্রাজিলের বিরুদ্ধেই। কোপা আমেরিকায় সে দিন হারের যন্ত্রণা সঙ্গে করে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। যন্ত্রণাক্লিষ্ট গলায় তোপ দেগেছিলেন রেফারির বিরুদ্ধে। হয়েছিলেন সাসপেন্ড। শুক্রবারও আবার তিনি আর্জেন্টিনা জার্সিতে ফিরলেন। কাকতালীয়ভাবে প্রতিপক্ষ সেই ব্রাজিল। তবে এ দিনের সুপারক্লাসিকো তাঁর প্রত্যাবর্তন স্মরণীয় করে রাখল। তিনি মাঠ ছাড়লেন মুখে এক চিলতে হাসি নিয়ে। তিনি লিওনেল মেসি। যাঁর গোলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারাল আর্জেন্টিনা। ম্যাাচটা হতে পারে নিছক এক ফ্রেন্ডলি। তবে রিয়াদের এই মেগা ম্যাচে দুই কোচই শক্তিশালী প্রথম একাদশ তৈরি করেন। একদিকে রবের্তো ফির্মিনো-গ্যাব্রিয়েল জেসুস ও উইলিয়ানের ত্রিফলা নামান ব্রাজিল কোচ তিতে। জবাবে দলের সেরা অস্ত্র মেসিকে দিয়ে শুরু করে আর্জেন্টিনা।
প্রথমার্ধের শুরুর থেকে তখন ম্যাচটা ছিল পুরো আক্রমণ বনাম আক্রমণ। ব্রাজিল যেমন সুন্দর সমস্ত মুভ তৈরি করছিল। আবার আর্জেন্টিনাও আক্রমণের জবাবে দেয় আক্রমণই। ম্যাচের ৮ মিনিটে গ্যাব্রিয়েল জেসাসের উপর লিয়ান্দ্রো পারেদেসের খারাপ ট্যাকলের সঙ্গে পেনাল্টি পায় ব্রাজিল। তবে উপস্থিত সেলেকাও ভক্তদের হতাশ করে স্পটকিক থেকে বল বাইরে মারেন জেসুস। যার কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার পালটা পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। সৌজন্যে মেসির উপর অ্যালেক্স সান্দ্রোর খারাপ ট্যাকল। এ বারও স্পটকিক ফস্কান মেসি। তবে রিবাউন্ড থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে ১-০ এগিয়ে দেন বার্সা রাজপুত্র। আর সেই যে আর্জেন্টিনা লিড নেয় ব্রাজিল আর কোনও উত্তর খুঁজে পায়নি। বিরতির পরে ব্রাজিলই বেশি দাপুটে ফুটবল খেলে। বল পজেশন রাখে। ছোট্ট ছোট্ট পাস খেলে মুভ তৈরি করার চেষ্টা করে। কিন্তু ফাইনাল থার্ডে গিয়ে হতাশ করে তিতের দল। আর্জেন্টিনার তখন শুধু একজনই যাবতীয় মুভ তৈরি করছেন। হ্যা মেসি। কয়েকটা নিখুঁত ড্রিবল করে যিনি ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা ছিলেন। ফ্রি-কিকে প্রায় দুরন্ত একটা গোল করেও দিচ্ছিলেন।
দিনের শেষে সেই মেসি ম্যাজিকই তাই পার্থক্য গড়ে দিল। যিনি দেখিয়ে দিলেন শুধু মাত্র ক্লাব জার্সি নয়। আন্তর্জাতিক মঞ্চেও তিনি সমান সাবলীল। দু’বছর আগে শেষবার আর্জেন্টিনা হারিয়েছিল ব্রাজিলকে। মাঝের সময়টা অভিশপ্ত কেটেছে আর্জেন্টিনার। মাঝে কোপা আমেরিকা সমেত দু’বার দেখা হয়েছে ব্রাজিলের সঙ্গে। দু’বারই হেরেছে আর্জেন্টিনা। যে অভিশাপ কাটালেন মেসিই।