বরিশালের কেডিসি বাস্তুহারা কলোনির ৯ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণে চেষ্টা করে এক যুবক। শিশুর পরিবার মামলা করতে চাইলে তাদের নিরুৎসাহিত করার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। গত ২ জুন (রোববার) রাত পৌনে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, রোববার রাতে এলাকায় মাসুম নামে এক যুবক ৯ম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ঘটনার পর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো মামলা করলে বাদী-বিবাদীর অনেক টাকা খরচ হবে বলে শিশুর পরিবারকে ভয় দেখান কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহজালাল। অবশ্য পরে এ ঘটনায় আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একই এলাকায় তার নানার বাসা থাকায় সেখানে যাচ্ছিল সে। রাত পৌনে ৯টার দিকে নির্মাণাধীন ভবনের সামনে এলে মাসুম তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। পরে একটি রুমাল মুখে গুজে দিয়ে তার ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে হাত-পা বেঁধে ফেলে।
পুরো ঘটনা মাসুমের মা দেখলেও তিনি কোনো কথা বলেননি। পরে মাসুম তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। কিন্তু সে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য ধস্তাধস্তি করলে ব্যর্থ হয় মাসুম।
এদিকে মেয়ের কোনো খোঁজ খবর না পেয়ে ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা তাকে খুঁজতে বের হয়। বিভিন্ন বাসা খুঁজে তারা স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। এ নিয়ে পুরো বস্তি সরগরম হয়ে উঠলে মাসুম নিজেই ওই ছাত্রীর পায়ের এবং মুখের বাঁধন খুলে তাকে ঘর থেকে বের করে দেয়।
এর আগেও স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে মাসুম তাকে উত্ত্যক্ত করত বলে অভিযোগ করে ওই ছাত্রী।
পরে থানায় খবর দিলে এসআই শাহজালালের নেতৃত্বে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ সময় ওই ছাত্রীর বাবা মামলা করার কথা বললে এসআই শাহজালাল তাকে নিরুৎসাহিত করেন।
ছাত্রীর বাবা জানান, এসআই শাহজালাল ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো মামলা করলে বাদী-বিবাদীর অনেক টাকা খরচ হবে বলে ভয় দেখান। এতে তারা পুলিশের কাছে মামলা করবেন কী না, সে ব্যাপারে সন্দিহান হয়ে পড়েন। পরে আদালতে মামলার সিদ্ধান্ত নেন তারা।
আজ রোববার ওই ছাত্রীর বাবার সঙ্গে যোগযোগ করা হলে তিনি জানান, আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পর এসআই কেন মামলা করতে নিরুৎসাহিত করেছেন তা খতিয়ে দেখা হবে। মামলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।